শ্বেতকাফন

আমি এখন তাহলে সেদিকেই যাবো, যেদিকে তোমার পদশব্দ নেই, নেই বোতলকুড়ানো বালিকার অনুসরণ আর রাত -নিশীথের প্রহরীর হুইসেলের ক্লান্ত কান্না। প্রিয়াহারানো নগরময় চষে বেড়ানো রিকাশাচালকের একই সুরের বাঁশি শুনবো না আমি আর , শুনবো না কাঁপানো মিসড কলের  গোপন আহবান। আমাকে এবার যেতে দাও অশ্বত্থের বিশাল খোড়লে, যেখানে দাঁড়াশ সাপের সাথে কুণ্ডলি পাকিয়ে কাটিয়ে দেবো গোটা একটা ঋতু আর মুখ গুঁজে দেখবো মৌয়ালের সাথে চিতাবাঘের মরণপণ অসম যুদ্ধ।
আমি বেঁচে আছি  তোমার হাসির ফোয়ারায় ভেসে ভেসে কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্নতা হবো বলে, আর তুমি তার বদলে পাঠিয়ে দিলে শেষের পত্রখানি, যা’ আমি একদা লিখেছিলাম তোমাকেই, একই কুটিরের বাসিন্দা হওয়ার অমল আকাঙ্ক্ষায়। 
কী অপরূপ দক্ষতায় সকল শব্দকণাকে অবলীলায় মুছে তাকে নিদাগ ধবল করে দিলে।
এখন সেই ধবল পত্রখানি  শ্বেত কাফন হয়ে  রাতদিন চোখের সামনে পত পত করে উড়ছে।

তুমি হাসছো। হাসি আসলে তোমাকে মানিয়ে যায়, সেই সেবিকার মতো, যে শবদেহের শিয়রে কাপড় টেনে দিয়ে ঘরে এসে নিশ্চিন্তে  কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

Scroll to Top