প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

উপদেষ্টা

শব্দবোধ সাহিত্য পত্রিকা

 

 

২৬ শে শ্রাবণ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ

১০ ই আগস্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ

বাণী

 

মুক্তির রাজনীতি বেগবান হলে শিল্প-সাহিত্য প্রত্যক্ষভাবে মানুষের বোধ ও বিশ্বাসের ভিতকে শক্তিশালী করে ।সাহিত্যের নিজেরই মূল্য কমে গেছে। সমাজে বস্তুগত উন্নতি ঘটেছে, কিন্তু সে উন্নতি পুঁজিবাদী ধরনের। এই উন্নতি মুনাফা চেনে, সংবেদনশীলতা বোঝে না। সাহিত্য তো বস্তুগত মুনাফা দেবে না, দেবে অন্তর্গত আনন্দ, বিকশিত করবে সংবেদনশীলতাকে। ভোগবাদিতা এসেছে, এসেছে স্থূল বিনোদন। সাহিত্য তো স্থূল বিনোদনের সামগ্রী নয়। দুরন্ত তৎপরতা চলছে মিডিয়ার। মিডিয়া জগৎটাকে বড় করতে গিয়ে ছোটই করে ফেলেছে। ছোট পর্দায় আমাদের আটকে রাখছে। যেমন ধরা যাক চলচ্চিত্র। 

সাহিত্যের লড়াইটা কিন্তু এই বিচ্ছিন্নতার বিরুদ্ধেই। সাহিত্য হচ্ছে সামাজিক। বই আমরা একলা একলাই পড়তে পারি, পড়িও; কিন্তু বই আমাদের যুক্ত করে বড় জগতের সঙ্গে, নিয়ে যায় অজানা-অদেখা মানুষদের কাছে; আমরা তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ি।

বাংলাদেশ আমলে সাহিত্যপত্র নামের একটি ত্রৈমাসিকের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম; সেখানেও সাহিত্যসমালোচনা থাকত; তবে আগেরটির চেয়ে কম। ২০ বছর হতে চলল, সাহিত্য-সংস্কৃতির ত্রৈমাসিক নতুন দিগন্ত নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করছি, তাতে সাহিত্যসমালোচনা ছাপা হয় আগের দুটির তুলনায় অনেক কম। সাহিত্যসমালোচনার এই নিম্নগমন বস্তুগত উন্নয়নের বিপরীতমুখী করুণ সহযাত্রী। নিয়মিত প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা এখন নেই বললেই চলে। দৈনিক পত্রিকায় আগে সপ্তাহে দুই পৃষ্ঠা বরাদ্দ থাকত সাহিত্য সাময়িকীর জন্য; এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা অত্যন্ত সংকুচিত, কোথাও কোথাও অন্তর্হিত। চাপ আছে বিজ্ঞাপনের।সেই ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তির যুগে সাহিত্যের বিকাশে অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। এই অনিবার্যতা উপলব্ধি করে শব্দবোধ নামক পত্রিকা যে যাত্রা শুরু করেছে,তাতে আমি আনন্দিত হয়েছি।  যুগের চাহিদা মিটিয়ে সাহিত্য বিকাশের ধাপে অবদান রাখুক শব্দবোধ, এই কামনা করি।

 

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী 

Scroll to Top