বীজে বীজে বীজসৃষ্টি
আমারো তোমারো কোনো আদিঅন্ত নেই
তোমারো আমারো কোনো আদিঅন্ত নেই
এই পত্র এই পুষ্প জনে জনে জন্ম নেয়
শুধু তোমাতেই
শুধু আমাতেই
বীজে বীজে বীজসৃষ্টি শুধু দৃষ্টিতেই।
আমাকে না দেখে যদি তোমাকে পেলাম
তোমার ডাকে কি তবে আমিও এলাম?
বন্দরে অন্দরে যদি অন্তর হলাম,
ভেতরে বাইরে তবে কাকে যে পেলাম!
আমাদের পাত্রে কোনো হেমলক নেই;
বীজে বীজে বীজসৃষ্টি শুধু দৃষ্টিতেই।
ফেরার সময় হলে ফিরে যাবে যদি,
আসা ও যাওয়ায় অন্ধ কেন নিরবধি?
বলো কে কে হেঁটে যাবে জোয়ার অবধি?
বলো কে কে রেখে যাবে দেহলীন গদি?
আমাদের মাঝে কোনো দরদাম নেই,
বীজে বীজে বীজ সৃষ্টি শুধু দৃষ্টিতেই।
আকাশ কি ফিরে যাবে মাটির নিকট?
দৃশ্য ও অদৃশ্য হবে সব দৃশ্যপট।
থাকবে না আর কোনো বিদগ্ধ সঙ্কট;
স্বর্গে মর্ত্যে তিরোহিত অমঙ্গল ঘট
মুহূর্ত মুহূর্তে যদি যায় অনন্তেই
বীজে বীজে বীজসৃষ্টি শুধু দৃষ্টিতেই।
ফেরা মানে ফেরা নয়, ফেরা মানে আসা
ভালোবাসা ফেরি করে শুধু ভালোবাসা।
ফেরারিও পথ চেনে
কথা রেখেছিলে নাকি কোনো উড়োপথ?
আমার ভিতরে এলে আমার শরৎ।
পার হয়ে বাঁকে বাঁকে কতো মহামায়া
আমার বাহিরে হাসে কতো ছায়াপথ।
পয়ারের বুকে-মুখে ফোটে শাদা কাশ
এইখানে মেঠোপথে আমার নিবাস;
পথ শুধু হেঁটে হেঁটে যায় পথে পথে,
এ-পথে ফিরেছো বুকে আমার শরতে।
মাঠে মাঠে জোছনা-ফাঁদ, আকাশ আবাদ,
আশ্বিনে বাসিনি ভালো অন্য কোনো চাঁদ।
মাতামুহুরীর ধারা ব্রহ্মপুত্রে মেশে,
ভারসাম্যময় ডানা নদ-নদী ঘেঁষে,
পাখিরা সাঁতার কাটে বোষ্টমীর বেশে।
কারা আজ জ্বরতপ্ত, কারা ঘরে সুখে,
কারা তবে ডানা মেলে নীল অভিমুখে?
মানিকজোড়ের পাশে হাসে শঙ্খচিল,
লাল শাপলায় ভাসে পুরো পদ্মবিল।
সাপ ও ভ্রমর করে বেলাবেলি খেলা
ফিরেছো তুমিও ঘরে তাহলে এ বেলা!
আমার ঠিকানা আর অন্য কিছু নয়,
এ বুকে তোমার বুক ভারসাম্যময়।
ভালোবাসা চোখ রাখে মর্মে অমরার,
ফেরারিও পথ চেনে যখন ফেরার।