পৃথিবী সিরিজ
এই অন্ধগুহা থেকে আমি
কী করে বেরোই বলোতো!
মুখবন্দি মাটির কলোসের মতো
এই গুহা রাত্রিময়।
সুরচালিত একটা বিমান
কেউ আমার কাছে পাঠাও।
দুই
হাওয়াঘর ছিলো সারিবদ্ধ;
ভুল করে ঢুকে পড়েছি
ভুল কেবিনে। ঘোর কেটে গ্যাছে
‘পৃথিবীর গাড়িটা থামাও
আমি নেমে যাবো।’
তিন
পৃথিবীতে প্রবেশের গুহামুখ নিয়ে
বিবিধ অভিক্ষেপ ছিলো বলে
ভয়ার্ত, নেমন্তন্ন করোনি কখনো।
অথচ কতো রায় সেখানে
জীবনবস্ত্রসমেত অবস্থান নিয়েছে!
চার
আপাত মনে হয় কতো কাছাকাছি
নিকটবর্তী এই সবকিছু, পরস্পর।
অথচ উল্টোদূরবীনে রাখো চোখ
কতো পরিষ্কার দ্যাখো
কতো মূর্ত হয়ে ওঠে দূরত্বরেখা!
পাঁচ
অতর্কিত বেজে উঠলে বিকারগ্রস্ত
ভায়োলিন, অপ্রস্তুত নীল ফড়িঙগুলো
চমকে ওঠে চলন্ত ছবি থেকে।
দ্বিধা সংক্রমিত হলে দূরে
অপলক তাকিয়ে থাকে কাঠের হরিণ।
ছয়
বৃত্তছায়া দেখে এগুচ্ছো ক্যানো
ওর পেছনে পৃথিবী নেই তো;
কোথায় ভরবে চাকু, পুরোটাই ব্ল্যাকহোল।
আর আত্মসীমানা ছাড়িয়ে
ও এখন বিকাশোন্মুখ, প্রলয়ঙকরী..
সাত
সবুজ পাতাবাহারের দিকে তাকাও
ধীরে ধীরে পুড়ে যাও সুন্দরের উত্তাপে।
যখন ভোরের চূর্ণ অবশেষটুকুও
অবশিষ্ট নেই আমাদের জন্য
পবিত্রতার আশ্রয় দেবার।
আট
এখনো কিছু স্মৃতি ছড়ানো ছিটানো
অবহেলে পড়ে আছে পৃথিবীবারান্দায়।
ছাউনির ঠিক নিচেই আমাদের
বিগত জন্মের ভোর ও সন্ধ্যার স্মৃতি
মরামাছের মতো চুপচাপ।
নয়
মাথার সীমানা থেকে অনেক দূরত্বে
উচ্চতায় একটা আকাশ ঝুলছে;
বাতাসে ঝাপটা লেগে মৃদুমন্দ দুলছে।
আমার ব্যক্তিগত পৃথিবীতে কোনো আকাশ
নেই, পুরোটাই শরের আস্তর।
দশ
খোসা ছাড়ালেই বেরিয়ে পড়ে গোলাকার
আস্ত পৃথিবী; পূর্ণবৃক্ষজুড়ে
ছড়িয়ে পড়ে প্রিয় হরিণীর অর্ধমিথ্যা কথামালা।
জরাগ্রস্ত কুয়াশার ফলে কলমখাতা
হারিয়ে ফেললাম লেপমুড়ি দিতে।
ধুর, অসীম বিরক্তিউৎপাদক হাওয়াকল
আমদানী হলো না বলেই!
শীতকাল ক্যানো এলো ঝিমলি?
এগারো
কিছু শব্দ আমি লুকিয়েছিলাম তোমার
গোপন গুহায়, আমার ব্যক্তিগত পৃথিবীতে।
মৃদু শব্দেরা খুব দূরন্ত হয়েছে
আজকাল, ঘরবাড়ি তছনছ করে।
আমার পৃথিবী হ’লো উল্টোপালক
ভেঙে তছনছ—শ্রী একাকার!