অবসান হোক সব ভাষা-বিতর্কের। তোমার-আমার! তোমার ইশারা-ভাষা কবেই নিয়েছি রপ্ত করে;কী করে এখন ফাঁকি দেবে বলো? তোমার ভ্রুভঙ্গিথেকে নেমে আসে প্রণয়ের ঢল; আমি ভেসে যাই!ভেসে যেতে যেতে খুব হৃদয় নাচাই; বলতেই পারো :ডানা তোলা রাজহাঁস; দেয়াল টপকে রোজ সীমানাবাড়াই। ভাষা-দূষণের পক্ষদলে কে লেখায় নাম?তাকে আজ রেখে আসি ধু-ধু শূন্যতায়! সবুজ বিহঙ্গথেকে কোনো সুর পাবে না […]
কবিতা
বীজে বীজে বীজসৃষ্টি
আমারো তোমারো কোনো আদিঅন্ত নেইতোমারো আমারো কোনো আদিঅন্ত নেইএই পত্র এই পুষ্প জনে জনে জন্ম নেয়শুধু তোমাতেইশুধু আমাতেইবীজে বীজে বীজসৃষ্টি শুধু দৃষ্টিতেই। আমাকে না দেখে যদি তোমাকে পেলামতোমার ডাকে কি তবে আমিও এলাম?বন্দরে অন্দরে যদি অন্তর হলাম,ভেতরে বাইরে তবে কাকে যে পেলাম!আমাদের পাত্রে কোনো হেমলক নেই;বীজে বীজে বীজসৃষ্টি শুধু দৃষ্টিতেই। ফেরার সময় হলে ফিরে যাবে […]
বেচাবিক্রি
আজকাল খুব বেশি ভাবি না।ভাবার জন্য যা দরকার, ঘিলু –বিক্রি করে দিয়েছি। ক্রেতা?করপোরেট। বেশ শাঁসালো মাল। ছকবাঁধা জীবনে অভ্যস্ত হয়েছি।স্বাধীনতার মিষ্টি কি তেতো স্বাদজানতে চাই না, কী দরকার?ঘিলুহীন মাথায় এত বোঝা কুলায় না। উঁচু-নিচুর ভেদরেখা স্পষ্ট এখন।কথা বেচে মানুষ ঠকানো বেশ চলছে,বাজারে বেশ কাটতি কথা-বেচা মানুষের।আমি কথা বলি কম, কাটতিও কম তাই। কবিতা লেখার সময় […]
সবরকমের ক্যালকুলেটর
যেকোনো জন তিনজন; ভেতরে এক আমি—তুই আমি—সে আমি। বিদেশ খুললে সিন্দুক, দেরাজ খুললে স্বপ্ন। পরিস্থিতির ভেতর বহু অ্যাকোস্টিক গিটার। অনবরত পাতাবাহার। গুনগুন। বাদকটি স্নান করে—গাভর্তি ঝরাপাতা।বাদকটি আরও সুন্দর—কখনো-বা উঁকি দিয়ে বসে বিশ্বভরা নিরজন। যখন তুমি ধানখেত। তখনো অন্তরে-বাহিরে সুনিবিড় এবং আমি একা। একার কোনো বন্ধু হয় না জেনে আলো বলে হারিকেন কখনো একা নয়এবং তখনো […]
শহরের সব গলিতে
সব শহরের থাকে আশ্চর্য গলিপথথাকে দাঁত উঁচু দোকানফেরিওয়ালার ফন্দিফিকিরভিখারিদের একঘেয়ে অনুনয়লোহা আর সোনা পেটানো গান গলির বুক বরাবর কাপ -চামচের দ্বৈরথশেষ মাথায় মধ্যবয়স্কাদের কণ্ঠের বারুদআর আরব্য রজনীর অনি:শেষ গল্প ধু ধু বিকেলে এক তরুণবিরহ পায়ে হাঁটেজানালার মরুপথে তরুণী শহরের সব গলিতে জুলেখা থাকেআর এক স্বপ্নদ্রষ্টা ইউসুফ অংশীদার চিতাভষ্ম বেঁধে রাখে দেহআগুন উন্মত্ত রাগেছিঁড়ে ফেলে মৃত্যুচিহ্ন […]
কৃষ্ণপক্ষের রাত
তিন কুড়ি চারের সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা সেরেএই এসে দাঁড়িয়েছি তেমাথার মোড়েযে-পথে এসেছি এতকাল ধরেআজ সেই পথ অন্তর্হিতমহাভারতের যুদ্ধ শেষে অর্জুনের রথের মতন।মহাপ্রস্থানের পথের মতো সামনে বিছিয়ে থাকা দুখানি রাস্তারএকটি বিপদসংকুল, শর্টকাট,বাকিটিও খানাখন্দে ভরা তবে স্বাভাবিক,একটু সময় বেশি লাগে। সায়াহ্নের আবছায়ায় গুলিয়ে যায় সবদেখি, সূর্যাস্তের আকাশে হেঁটে যায়অলৌকিক মেঘের ড্রাগনতার চেরা জিভে মাঝেসাঝে খেলা করে নীলাভ বিদ্যুৎঅনেকটা […]
রাবারে মোড়া কাছিম-খোল
১. ওখানে রাবারে ঢাকা কাছিমের খোল রাখা আছে # খোলটিকে ঘিরে, জেনো, তীব্র-ঝাঁজ গুল্মের পাহারা # হপ্তাকাল যত্ন করে ধুয়ে-মুছে-ধুয়ে নরম তুলোয় ঢেকে আগলে রাখতে গিয়ে আমি দিশেহারা # ২. আহ্ লাগছে…পায়ে পড়ি আর নিচে নামতে যেয়ো না # আহ্ নইলে কী গরম টগবগে লাভা গড়াবে, ছুটবে আর বেগানা চোখেরা যাবে জেনে # আহ্ নইলে, […]
পাঠবৃত্তের মাঝে
অতীশ দীপঙ্কর ! দাঁড়িয়ে আছেন আচার্য শান্ত রক্ষিতের সমাধির কাছে। শ্রীমুখের সেই প্রার্থনার জ্যোতি সেই সুন্দরের কি বর্ণনা হয় ? বুকের ভেতরে রাখা বিক্রমশীল বিহারকে নিয়ে চলেছেন তিনি ওই সুদূর তিব্বতে— অথবা ইলতুৎমিস এসেছিলেন স্থাপত্যের মিলনপর্বটির মাঝে তখন হিন্দু মুসলমান বিভেদের কথা কখনও ওঠেনি— আঞ্চলিক শৈলী ছিল গৌড় বা পান্ডুয়া জৌনপুর, বিজাপু্র, গুজরাট, মালব ও […]
দু’টি কবিতা
তালগাছ গরুগাড়ি ও ঠেলাগাড়িতে অভ্যস্ত জীবনটা–রেলগাড়িতে, মোটরগাড়িতে উঠতেপারল না, জেটবিমান তো অনেক দূরের বিষয়!গরুগাড়ি এখন যাতায়াতে পরিত্যক্ত, তুমিও!ঠেলাগাড়ি এখন যাতায়াতে পরিত্যক্ত, তুমিও!মাটির পাতিল এখন অ্যালুমিনিয়ামেরপাতিলে পৌঁছেছে–তুমি পৌঁছেছো কোথায়?তাল রাখতে পারোনি, তালগাছের তালতোমার বাগানে থাকলেও, সেই তাল তোতোমার আয়ত্বে নেই! একমুখী নৈতিকতা ইঁদুরও তোমার চেয়ে বুদ্ধিমান, তুমি তার চেয়ে–দশগুণ বুদ্ধির চর্চা করেও গর্তের অন্ধকারেকিছুই দেখতে পাওনি, […]
আমিনুল ইসলামের ২টি কবিতা
১.প্রবাদের গাছের নিচে ক্রিকেট নেট প্রাক্টিসে কমতি নেই অথচ কিছুতেই আসছে না সে-গতি!মাঝে মাঝে এক রান হচ্ছে–কখনোবা দু’রান; কিন্তু চৌকা হচ্ছে না,ছক্কা ভাসছে না হাওয়ায়। এভাবেই জমা হয়েছে একটা হাফ সেঞ্চুরীঅবশ্য গড়টাও নেহায়েৎ মন্দ নয়; অথচ সেঞ্চুরীর নাগাল মিলছে না!আমি ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকি, বিপরীত প্রান্তের ছক্কা উড়ে যায়কাঁপন দিয়ে আমার হেলমেটে। আমি কোনোদিনও ম্যান […]