নিমেষেই জৌলশ হারিয়ে ফেলে সুবর্ণ ফুলেরা দেহে বাঁধে রোগ বাসা নতুন ঘরে ঘরে সারারাত ঘুন করে গুনগুন সব নীল, শাপে-সন্তাপে নীল সব বেদনার পারা অমোঘ আশ্বাস বলে কিছু নেই যেসব মন্ত্রগুণে দিন গুজরায় লোকে- স্বপ্ন আঁকে সারাক্ষণ দিনশেষে সব মিছে- চুপেচুপে কথার ধ্বনিরা করে আলোহীন আঁধারের পালা! জীবনের ঔরষে জন্ম নেয় মরনের অপরূপ রঙ-লীলা-সাজ মতিনের […]
কবিতা
মুহূর্ত
আমি সেই দিগন্তমুখ ছুঁয়ে আছি আজও তুমি বসে আছ স্বল্প দূরেই, মুখোমুখি কথা বলছ, ভেসে আসছে কথা সুচিরকালের আনন্দ-বিরহ ছুঁয়ে ফুটে উঠছে অপরূপ ভাস্কর্য-ভঙ্গিমা চোখের পলক পড়ে না, যেন স্থির প্রস্তরীভূত এক শীতের দুপুর তুমি কথা বলছ, দুলে উঠছে মানবজন্ম আমাদের পোড়ো বাড়িটির গহ্বর থেকে ডানা ঝাপটে উড়ে গেল পাখি মায়াবী দিগন্ত টানছে, শান্ত আকাশ […]
এই কবিতার নাম হতে পারতো বাজপাখি
এখন শিমুলের ফল ফেটে এই বৃদ্ধ বাতাসে তুলা উড়বার দিন নয় তাই আমি কোনো এক অন্ধ বালিকার পিছু পিছু সূর্যস্নানে যাচ্ছি– যে বালিকাকে আমি প্রথম দেখেছি ৪৭ সালের উদ্ধাস্তুদের মিছিলে তখন তার বয়স মিনিমাম ৭১ হবে–আর আমার ১৭ এখন আমার ৭১ আর তার ১৭ ছুঁই ছুঁই। আনমনে আমি তার হাত স্পর্শ করার চেষ্টা করি হঠাৎ […]
মাটির মাদুর
কেউ কেউ চোখের কোণ দিয়ে হেসে ওঠে সে হাসি বড় ভয়ংকর কেউ কেউ বসে পড়লেও তার উচ্চতা মাপা যায় ছায়াকে ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে বারান্দায় রোজ পেতে দিও মাটির মাদুর। ভালোবেসে নারীও একদিন খুলে নেয় পায়ের একজোড়া রূপোর বোতাম ভুল করে গতকাল মাছি ও মশা ভেবে উড়িয়ে দিয়েছি জমানো শৈশবের আত্মকথা বহুদিন ব্রীজের নীচে কুকুরের কাছে […]
নৈঃসঙ্গ্য
অ্যাকা! এক্কা! একা! তুমি আমি এবং একটি কার্তুজও সুতরাং, ডালে ঝাঁকপাখি অতঃপর কেউ কারও নেই! খাঁখাঁ। হুহু। ধূ-ধূ। উধাও। উড়ছে পালক, সাঁতরাচ্ছে দেহ।
মাতৃভাষা
আমার প্রথম চিৎকার থেকে বেরিয়ে এসেছে প্রপিতামহের অক্ষর আমার প্রথম চিৎকার থেকে বেরিয়ে এসেছে মাতৃদুগ্ধরূপী বর্ণমালা আমার প্রথম চিৎকার থেকে বেরিয়ে এসেছে অ আ ক খ ধ্বনি প্রতিধবনি আমার প্রথম চিৎকার থেকে বেরিয়ে এসেছাে তুমি হে আমার বাংলা ভাষা তােমার হাতে আমি তুলে দিয়েছি অবগাহনের উন্মুখর জলরাশি প্রতিটি নদীর জলে, স্রোত ও সঙ্গম মুখে […]
মিনোতার
( বন্ধু তমাল রায়কে ) ————————- ১. অনেক গোলকধাঁধা পার হয়ে এলো মিনোতার আধামানবের রূপে, অর্ধ্ব-ষণ্ড হয়ে … হয়তো সে জানে, কিংবা, আদৌ জানে না সে তার নিজেরই পিতা; —সন্তান নিজের ! সে একাকী বুনে চলে দুই হাতে নিজ রক্তবীজ হয়তো-বা হয়ে নিরুপায়—কিংবা তার নিজের ভেতরে কোনো ঘুমন্ত আহ্লাদে তার শুধু অবিরাম রণআয়োজন নিজের ভেতরে এক […]
তুমিই শিশু তুমিই পিতা
সতেরো মার্চ উনিশ-শ বিশ জন্ম নিলো টুঙ্গিপাড়ায় বাঙালিদের জাতিপিতা; মা-জননী দুহাত বাড়ায়; পিতার মুখে ফুটলো হাসি, ফুটলো কুসুম রাশি রাশি, পাখির ডানায় বাঁশের পাতায় সুরে সুরে বাজে বাঁশি; দোয়েলশ্যামা লাফিয়ে চলে, ইলিশেরা সাঁতার কাটে, বাঙালি আজ পাখপাখালি, জারি সারি হাটে মাঠে; প্রমত্ত আজ গঙ্গা-পদ্মা, কর্ণফুলী ধায় যমুনায়, মধুমতি ব্রহ্মপুত্র সব নদী যায় এক মোহনায়; অষ্টপ্রহর […]
অঅঅঅঅঅঅ…
আহমেদ শিপলু ফেস্টুনভোরে জেগেছিল বর্ণমালার স্লোগান ওরা কার্তুজ ভেবে তাক করেছিলো রাইফেল বললাম অঅঅঅঅঅঅ… আর অমনিই ছুটে এলো চারপাশ থেকে হাহাকার! স্বরেআ হ্রস্বই দীর্ঘঈ হ্রস্বউ দীর্ঘঊ, সকলের সম্মিলিত ক্রন্দন! ছিলাম মিছিলে সেদিনের সেই রাজপথ সাদাকালো ভোর আর লাল লাল স্লোগান ফেস্টুনজুড়ে ছিলাম তো! বললাম কঅঅঅঅঅঅঅঅ… ঠায় দাঁড়িয়ে গ ঘ ঙ চ এর গাল বেয়ে নেমে […]
বর্ণমালা
সম্ভবত আরো কিছুকাল বেঁচে যাবো,আকাশের গায়ে বর্ণমালার রূপ আঁকতে পারবো শেষবেলানির্ভয়ে বলতে পারবো পৃথিবীকে —দেখো, বাঙালিরা পারে!আকাশস্পর্শী পিরামিডের মতনএকটি সুউচ্চসৌধ গড়ে তুলতে চাইযার দীর্ঘ পাটাতন জুড়ে আকাক্সক্ষার সব রঙথাকবে সাজানো স্তরে স্তরে। আরপ্রতিটি শব্দের গায়ে আঁকা হবে প্রতিধ্বনি ছায়ায় আড়ালেযেখানে মুদ্রিত হবে বর্ণমালার প্রতিচ্ছবিযেখানে উঠবে ফুটে বাঙালির শৌর্যের রূপ আপন আলোয়! শব্দ সাজাতে গিয়ে দেখি—কিছুশব্দ […]